স্বদেশ ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিধান সভার নির্বাচনে পঞ্চম দফার ভোটের আগে নাটকীয় ঘটনা ঘটল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আগামী ২৪ ঘণ্টা প্রচার করতে পারবেন না। এমন নিষেধাজ্ঞাই জারি করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বেলা ১২ থেকে ধর্নায় বসতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
নিষেধাজ্ঞার ফলে স্থানীয় সময় গতকাল রাত ৮টা থেকে আজ রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না মমতা।
অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক- কমিশনের নিষেধাজ্ঞাকে এভাবেই সম্বোধন করেছেন মমতা ব্যানার্জি। টুইটে নেত্রী লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বেলা ১২ থেকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসব।’
কী কারণে মমতার প্রচারে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা
সংখ্যালঘু ভোট ভাগের আর্জি জানানো এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে মন্তব্যের কারণে এই নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।
গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরের সভায় নাম না করে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) আব্বাস সিদ্দিকিকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। ‘শয়তান ছেলে’ হিসেবে উল্লেখ করে মমতা বলেছিলেন, ‘হাতজোড় করে বলছি যে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। মনে রাখবেন, বিজেপি এলে সমূহ বিপদ আছে। সবচেয়ে বেশি (বিপদ) আপনাদের।’
ওই মন্তব্যের পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছিলেন মমতা। তিনি প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তারই মধ্যে ৭ এপ্রিল কোচবিহারের জনসভা থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, তাহলে একদল মহিলা তাদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর অপর দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে হবে না। আপনাদের ভোট নষ্ট করবেন না।’
দুই মন্তব্যের জন্যই মমতাকে নোটিশ পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সোমবার কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মমতা সন্তোষজনক উত্তর দেননি। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে গিয়েছিলেন।
কমিশনের তরফে অবশ্য কড়া ভাষায় জানানো হয়েছে, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩ (৩) ও ৩ (এ) ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬, ১৮৯ এবং ৫০৫ ধারা ভঙ্গ করেছেন মমতা।
কমিশন জানিয়েছে, মমতা যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত উস্কানিমূলক ও প্ররোচনামূলক। তার জেরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হতে পারত। যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ওই মন্তব্যের নিন্দার করার পাশাপাশি কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে মমতাকে। সেই সঙ্গে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর থাকার সময় এইরকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার ‘পরামর্শ’ দিয়েছে কমিশন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস ও এই সময়